মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪০ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রমজানে ধৈর্যের প্রশিক্ষণ

মোহাম্মদ এনামুল হক ফজলে রাব্বী:
রোজা ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। রোজার মাধ্যমে মানুষের ধৈর্যশক্তি, দৃঢ়তা ও অধ্যবসায়ের অভ্যাস তৈরি হয়। আর রোজার অনুভূতি মানুষের অন্তর থেকে যাবতীয় দুর্বলতা ও রিপুর কামনা মুছে ফেলে। রোজার আরেক উপকারিতা হলো রোজার মাধ্যমে মানুষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞা, উচ্চ মনোবল ও ইচ্ছাশক্তি অর্জন করতে পারে। আর উন্নত মনোবল ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি ছাড়া কেউ রোজা পালনরত অবস্থায় ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করতে পারে না। কষ্টসহিষ্ণু ও ধৈর্যের প্রশিক্ষণের জন্য রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। রোজা সংক্রান্ত কোরআনের আয়াত ও হাদিসের পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, রমজান মাস মুসলমানদের জন্য প্রশিক্ষণের মাস, সংযত ও আত্মশুদ্ধির মাস, সত্য ও ন্যায়ের অনুশীলনের মাস। মানুষের দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ, সহমর্মিতা, সমবেদনার প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত হওয়ার মাস। এই মহাসুযোগকে যারা কাজে লাগাতে পারে না, তাদের মতো নির্বোধ ও অভিশাপপ্রাপ্ত আর কেউ নেই। এ প্রসঙ্গে হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা এবং তদনুযায়ী আমল করা ত্যাগ করল না, তার এই পানাহার ত্যাগ করার কোনো প্রয়োজন নেই।’

প্রখ্যাত সাহাবি হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, শাবান মাসের শেষ দিনে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত খুতবায় বলেন, হে মানুষ! তোমাদের ছায়া দিতে আবর্তিত হতে যাচ্ছে- মহান মোবারক মাস। এ মাসে রয়েছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রজনী। এ মাসের রোজাকে আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন, এ মাসে রাতে দণ্ডায়মান হওয়াতে (তারাবির নামাজ) রয়েছে সওয়াব। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য একটি ফরজ কাজ আদায় করবে, সে অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ আদায়ের সওয়াব পাবে। এটি ধৈর্যের মাস, ধৈর্যের প্রতিদান হচ্ছে- জান্নাত। এটা সহমর্মিতার মাস। এ মাসে রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। সিয়াম হচ্ছে ঢাল। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মূর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ ঝগড়া করতে চায় তাকে বলবে আমি সায়িম অর্থাৎ রোজাদার। -সহিহ বোখারি

সর্বপ্রকার গোনাহ বর্জনের অঙ্গীকার: রোজার মাসে শুরুতে আল্লাহতায়ালা জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন, জান্নাতের দরজা খুলে দেন এবং শয়তানকে শিকলবদ্ধ করে রাখেন। তাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। মানুষ নেক কাজে অগ্রগামী হতে পারে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কালামের অনেক জায়গায় শয়তানকে মানুষের প্রকাশ্য শত্রু বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, শয়তান তোমাদের শত্রু, তাকে শত্রু হিসেবেই গ্রহণ করো। সে চায় মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি করা, মদ-জুয়ায় নিমগ্ন করা, মিথ্যা বলায় উদ্বুদ্ধ করা, এক কথায় খারাপ কাজে জড়িয়ে দেওয়া। তাই হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রোজা রেখে মিথ্যা কথা ও তৎসংক্রান্ত কাজ পরিত্যাগ করল না, তার রোজা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই শয়তানি কার্যক্রম থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে।

রোজাদারের জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজা: হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। এর মধ্যে একটি দরজার নাম- ‘রাইয়ান’। এ দরজা দিয়ে শুধু রোজাদাররা প্রবেশ করবে। অন্যরা এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে চাইবে। কিন্তু রোজাদার ছাড়া অন্য কাউকে এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। -সহিহ বোখারি

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION